ইসরায়েলের দীর্ঘকালীন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বর্তমানে এক সংকটপূর্ণ সময়ের মুখোমুখি। একদিকে গাজায় চলমান যুদ্ধ ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিকে প্রভাবিত করছে, অন্যদিকে এই যুদ্ধ নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকেও গভীরভাবে জড়িয়ে ফেলেছে। বহু বছর ধরে ইসরায়েলের রাজনীতিতে এক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত নেতানিয়াহু, এই সংঘাতের পূর্বেও নানা রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন ছিলেন। কিন্তু গাজা যুদ্ধ তাঁর রাজনৈতিক জীবনকে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা নিরপেক্ষভাবে অনুসন্ধান করব যে গাজা যুদ্ধের সাথে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভাগ্য কতটা ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
গাজা যুদ্ধের পূর্বে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
গাজা সংঘাতের পূর্বেও বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ জটিল ছিল। একদিকে যেমন তিনি দীর্ঘ সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তেমনি তাঁর জনপ্রিয়তা এবং রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা বিভিন্ন সময়ে ওঠানামা করেছে। গাজা সংঘাতের পূর্বে নেতানিয়াহুর জনসমর্থনের চিত্রটি খুব একটা ভালো ছিল না।
জুলাই মাসের শেষের দিকে ওয়াশিংটন সফর নেতানিয়াহুর জনসমর্থনকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে, যা ইসরায়েলের প্রেক্ষাপটে অভূতপূর্ব বলে মনে করা হয়। ইসরায়েলিরা ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। নেতানিয়াহু যখন আমেরিকান চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার নীতি গ্রহণ করেন, তখন অনেকেই এর প্রশংসা করেন। যদিও গণমাধ্যমে এই বিষয়ে সমালোচনাও করতে দেখা যায় যে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ক নষ্ট করছেন। তা সত্ত্বেও, এই সফরের পর তার জনসমর্থন বৃদ্ধি পায় এবং তিনি তার প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বেনি গান্তজ ও ইয়াইর লাপিদের চেয়ে জনমত জরিপে দুই অঙ্কের ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। সরাসরি ভোটের মতো জনমত জরিপকারী সংস্থাগুলিও এই সময়ে নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিকে সমর্থন করে, যারা ২০২২ সালের নির্বাচনেও নেতানিয়াহুর ডানপন্থী-ধর্মীয় জোটের বিজয়ের পূর্বাভাস দিয়েছিল। জুনে বেনি গান্তজ নেতানিয়াহুর সরকার থেকে পদত্যাগ করার পর থেকে তার জনসমর্থন ক্রমশ বাড়তে থাকে।
তবে, সংঘাতের পূর্বে নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা তেমন ভালো ছিল না। টাইমস অফ ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে বিচার বিভাগকে দুর্বল করার বিতর্কিত প্রচেষ্টার কারণে গাজা যুদ্ধের আগেই নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। এর পাশাপাশি, তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগও একটি বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ছিল। পিউ রিসার্চ সেন্টারের মার্চ-এপ্রিল ২০২৪ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, নেতানিয়াহুর প্রতি অসন্তোষের হার ২০১৩ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ ছিল, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। যদিও এই সমীক্ষাটি গাজা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তবুও পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় অসন্তোষ বৃদ্ধি পাওয়ায় যুদ্ধের পূর্বেও তার জনসমর্থনে নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
এছাড়াও, নেতানিয়াহু একটি ডানপন্থী এবং ধর্মীয় দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত জোট সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যেখানে বিভিন্ন দলের মধ্যে প্রায়শই আদর্শগত এবং রাজনৈতিক মতপার্থক্য দেখা যেত। এই জোটের স্থিতিশীলতাও গাজা সংঘাতের পূর্বে একটি উদ্বেগের কারণ ছিল। সংকটের পূর্বে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট একদিকে যেমন আপাতদৃষ্টিতে শক্তিশালী দেখাচ্ছিল জনমত জরিপের ফলাফলে, তেমনি অন্যদিকে বিচার বিভাগীয় সংস্কারের প্রচেষ্টা এবং দুর্নীতির অভিযোগের মতো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জও বিদ্যমান ছিল। এই মিশ্র পরিস্থিতি গাজা যুদ্ধের প্রাদুর্ভাবের পর এক নতুন মোড় নেয়।
গাজা যুদ্ধের প্রভাব: ইসরায়েলের জনমত এবং নেতানিয়াহু
গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলের জনমত এবং নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অবস্থানের উপর এর তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব পড়ে। ৭ই অক্টোবরের হামাসের হামলার অব্যবহিত পরেই নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা দ্রুত হ্রাস পায় এবং তার পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়। টাইমস অফ ইসরায়েলের একটি জরিপে দেখা গেছে যে ৭২% ইসরায়েলি মনে করেন ৭ই অক্টোবরের ব্যর্থতার জন্য প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ করা উচিত। এদের মধ্যে ৪৪% অবিলম্বে তার পদত্যাগ চান, এবং ২৮% মনে করেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে তিনি পদত্যাগ করতে পারেন। জরিপে আরও দেখা যায় যে সরকারের সমর্থকদের মধ্যেও ৫০% মনে করেন নেতানিয়াহুর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করা উচিত। উপরন্তু, ৩৯% জনমত নেতানিয়াহুকে ৭ই অক্টোবরের বিপর্যয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী মনে করে।
তবে, যুদ্ধের দ্বিতীয় বছর শুরু হওয়ার সাথে সাথে জনমত জরিপে নেতানিয়াহু এবং তার সরকারের পদক্ষেপের প্রতি জনসমর্থনে কিছুটা বৃদ্ধি দেখা যায়। সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখে মারিভ সংবাদপত্রের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ৪১% ইসরায়েলি বিশ্বাস করেন নেতানিয়াহু একটি জোট সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি। এটি পূর্বের জরিপের তুলনায় একটি উল্লেখযোগ্য পুনরুদ্ধার। একই সমীক্ষায় ৪৭% নেতানিয়াহুকে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত মনে করেন, যেখানে বিরোধী নেতা ইয়াইর লাপিদের পক্ষে সমর্থন ছিল ৩৪%। জেএনএস.ওআরজি-এর প্রতিবেদনেও নভেম্বরের শেষ দিক থেকে নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধারের কথা বলা হয়েছে, যার কারণ হিসেবে ইসরায়েলের অস্তিত্বের সংকট এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে তার দৃঢ় অবস্থানকে সমর্থন করাকে উল্লেখ করা হয়েছে।
গাজা যুদ্ধের লক্ষ্য এবং নেতানিয়াহুর কর্মপদ্ধতি নিয়ে ইসরায়েলিদের মধ্যে বিভিন্ন মতামত বিদ্যমান। পিউ রিসার্চের সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ৪০% ইসরায়েলি মনে করেন গাজার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান “ঠিক আছে”। ৩৪% মনে করেন এটি যথেষ্ট নয়, এবং ১৯% মনে করেন এটি বেশি হয়ে গেছে। টাইমস অফ ইসরায়েলের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যদিও ইসরায়েলিরা গাজায় যুদ্ধের মূল লক্ষ্যকে সমর্থন করে, তবে তারা নেতানিয়াহুর পদ্ধতি এবং তার উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দিহান। আল জাজিরার প্রতিবেদনে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভের কথা বলা হয়েছে, যেখানে অনেকেই মনে করেন তিনি জাতীয় স্বার্থ এবং জিম্মিদের মুক্তির চেয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতা ধরে রাখার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা যায়, ইসরায়েলিরা জিম্মিদের মুক্তি নাকি হামাসকে উৎখাত করা – কোনটিকে যুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত।
জিম্মি সংকট ইসরায়েলি জনমতের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। চ্যানেল ১২ নিউজের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৭২% ইসরায়েলি সমস্ত জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে গাজা যুদ্ধ শেষ করার চুক্তিকে সমর্থন করবে। তবে, জিম্মি আলোচনা এবং নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে জিম্মিদের মুক্তির চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার অভিযোগের কারণে তিনি সমালোচিত হয়েছেন এবং বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছেন।
জরিপের তারিখ | উৎস | নেতানিয়াহুর সমর্থন (%) | মূল অনুসন্ধান |
যুদ্ধ-পূর্ব (জুলাই) | ডিরেক্ট পোলস | ৫২-৫৪% (প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায়) | প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে দুই অঙ্কের ব্যবধানে এগিয়ে |
জানুয়ারি ৪, ২০২৪ | চ্যানেল ১২ | ১৫% | বিপুল সংখ্যক লোক তার পদত্যাগ চেয়েছিল |
এপ্রিল ১২, ২০২৪ | জরিপ | ৩৫% | সমর্থন কম ছিল |
জুলাই ১৩, ২০২৪ | চ্যানেল ১২ | প্রায় ৩০% | ৭০% বরখাস্তের পক্ষে, ৪৪% অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি |
সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪ | মারিভ | ৪১% (উপযুক্ত নেতা) | পূর্বের জরিপের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পুনরুদ্ধার |
সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪ | মারিভ | ৪৭% (সেরা প্রধানমন্ত্রী) | লাপিদের ৩৪%-এর বিপরীতে |
যুদ্ধ-পরবর্তী | চ্যানেল ১২ | এন/এ | ৭২% মনে করে ৭ই অক্টোবরের ব্যর্থতার জন্য তার পদত্যাগ করা উচিত |
মার্চ/এপ্রিল ২০২৪ | পিউ রিসার্চ | ৪০% (অনুকূল মতামত) | ২০১৩ সালের পর থেকে সবচেয়ে বেশি প্রতিকূল মতামত |
জনমত জরিপের এই তথ্যগুলো থেকে দেখা যায়, গাজা যুদ্ধ নেতানিয়াহুর জনসমর্থনের উপর একটি জটিল প্রভাব ফেলেছে। প্রাথমিকভাবে সমর্থন কমলেও, পরবর্তীতে তা কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়। তবে, যুদ্ধের লক্ষ্য, নেতানিয়াহুর কর্মপদ্ধতি এবং জিম্মি সংকটকে কেন্দ্র করে জনমত এখনও দ্বিধাবিভক্ত।
নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যতের উপর গাজা যুদ্ধের পরিণতি: বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণ
গাজা যুদ্ধের সম্ভাব্য পরিণতি এবং নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যতের উপর এর প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং থিঙ্ক ট্যাঙ্ক থেকে বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণ উঠে এসেছে।
টাইমস অফ ইসরায়েলের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধের লক্ষ্যকে ইসরায়েলিরা সমর্থন করলেও, তারা নেতানিয়াহুকে সেইভাবে সমর্থন করছেন না। জরিপে দেখা গেছে, যদি শীঘ্রই নির্বাচন হয়, তবে নেতানিয়াহুর দল সম্ভবত তাদের আসন হারাতে পারে এবং তার জোট সরকার পরাজিত হতে পারে। আল জাজিরার বিশ্লেষণে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে গাজায় বোমা হামলা পুনরায় শুরু করার নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত অনেক ইসরায়েলি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে করছেন, যার প্রধান লক্ষ্য তার ক্ষমতা ধরে রাখা এবং এর ফলে বিক্ষোভও দেখা গেছে। পিবিএস নিউজআওয়ারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু জিম্মি পরিবারের দাবি এবং তার ডানপন্থী জোটের অংশীদারদের মধ্যেকার দ্বন্দ্বে পড়েছেন, এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি তার রাজনৈতিক সংকট তৈরি করতে পারে।
সিএসআইএস-এর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, স্বল্প মেয়াদে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করা নেতানিয়াহুর জোটকে সুরক্ষিত করতে সাহায্য করতে পারে এবং একটি জাতীয় নিরাপত্তা জরুরি অবস্থা তৈরি করতে পারে যা রাজনৈতিক আপত্তিকে প্রশমিত করতে পারে। তবে, দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের অভাব এবং দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। আটলান্টিক কাউন্সিলের মতে, নেতানিয়াহু যুদ্ধের পূর্বেকার ব্যর্থতার তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছেন এবং নতুন ম্যান্ডেটের জন্য জনগণের কাছে যাওয়ার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন, যা তার জবাবদিহি এড়ানোর চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে। রেসপন্সিবল স্টেটক্রাফট-এর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত সম্ভবত তার ডানপন্থী অংশীদারদের সমর্থন জোরদার করা এবং দুর্নীতির অভিযোগের আইনি প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার উদ্দেশ্যে ছিল। তারা আরও মনে করে, ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র ক্রমশ নেতানিয়াহুর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক লক্ষ্যের সাথে নিজেদেরকে সংযুক্ত করছে। টিআরটি গ্লোবালের এক ইসরায়েলি শিক্ষাবিদের মতে, নেতানিয়াহু ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য এবং তার চরমপন্থী জোটের মিত্রদের খুশি করার জন্য যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন, এমনকি জিম্মিদের জীবনও বিপন্ন করছেন।
বিশেষজ্ঞদের এই বিশ্লেষণগুলো থেকে স্পষ্ট হয় যে গাজা যুদ্ধ নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। যুদ্ধ একদিকে যেমন তাকে কিছু রাজনৈতিক সুবিধা এনে দিতে পারে, তেমনি অন্যদিকে জনমতের চাপ, জোটের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে তার অবস্থান দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
যুদ্ধের দ্বিমুখী প্রভাব: নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী নাকি দুর্বল হচ্ছে?
গাজা যুদ্ধ নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অবস্থানের উপর দ্বিমুখী প্রভাব ফেলেছে। কিছু কারণ তার অবস্থানকে শক্তিশালী করতে পারে, আবার কিছু কারণ তার দুর্বলতার কারণ হতে পারে।
তার অবস্থান শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাব্য কারণগুলো হলো:
- প্রাথমিক জাতীয় ঐক্য: ৭ই অক্টোবরের হামলার পর ইসরায়েলে প্রাথমিকভাবে জাতীয় ঐক্য দেখা যায় এবং নেতানিয়াহু সরকারের প্রতি সমর্থন বাড়ে।
- ডানপন্থী সমর্থকদের সমর্থন: হামাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এবং যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নীতি তার ডানপন্থী সমর্থক এবং জোটের অংশীদারদের খুশি করেছে।
- আইনি প্রক্রিয়া বিলম্বিত: চলমান যুদ্ধ সম্ভবত তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির মামলার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে সাহায্য করছে।
- বাজেট অনুমোদন: যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের সুযোগ নিয়ে নেতানিয়াহু মার্চ ২০২৫ সালে রাষ্ট্রীয় বাজেট পাস করতে সফল হন, যা তার জোটের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক ছিল।
- আন্তর্জাতিক চাপের মোকাবিলা: কিছু ইসরায়েলি নেতানিয়াহুর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নতি স্বীকার না করার নীতিকে সমর্থন করে 1।
অন্যদিকে, কিছু কারণ নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অবস্থানকে দুর্বল করতে পারে:
- ৭ই অক্টোবরের ব্যর্থতার জন্য জনরোষ: হামলার পেছনের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা ব্যর্থতার জন্য নেতানিয়াহুর সরকারের প্রতি জনগণের ক্ষোভ এখনও বিদ্যমান এবং তার পদত্যাগের দাবি অব্যাহত রয়েছে 2।
- যুদ্ধ ব্যবস্থাপনায় অসন্তোষ: গাজায় বিপুল সংখ্যক বেসামরিক হতাহতের ঘটনা, যুদ্ধের দীর্ঘসূত্রিতা এবং সুস্পষ্ট কৌশলগত লক্ষ্যের অভাবের কারণে অনেকেই নেতানিয়াহুর যুদ্ধ ব্যবস্থাপনার সমালোচনা করছেন।
- জিম্মি সংকট: গাজায় বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে না পারা এবং রাজনৈতিক লাভের জন্য তাদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলার অভিযোগ তার জনপ্রিয়তা কমিয়ে দিয়েছে।
- আন্তর্জাতিক নিন্দা: নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলের গাজা অভিযানের কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে, যা তার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
- বিশ্বাসের অভাব: জনমত জরিপে দেখা গেছে, নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব এবং তার উদ্দেশ্য নিয়ে জনগণের মধ্যে বিশ্বাসের অভাব রয়েছে, অনেকেই মনে করেন তিনি ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থকে জাতীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে স্থান দিচ্ছেন।
মোটকথা, গাজা যুদ্ধ নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অবস্থানের উপর একটি জটিল প্রভাব ফেলেছে। একদিকে যেমন তিনি তার ডানপন্থী সমর্থকদের ধরে রাখতে পেরেছেন এবং কিছু রাজনৈতিক সুবিধা পেয়েছেন, তেমনি অন্যদিকে জনরোষ, আন্তর্জাতিক নিন্দা এবং বিশেষ করে জিম্মি সংকট তার অবস্থানকে দুর্বল করে তুলেছে।
ভবিষ্যতের রাজনৈতিক দৃশ্যপট: গাজা যুদ্ধের পরবর্তী ইসরায়েল এবং নেতানিয়াহুর ক্যারিয়ার
গাজা যুদ্ধের ফলে ইসরায়েলের রাজনৈতিক দৃশ্যপট ভবিষ্যতে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হতে পারে, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে নেতানিয়াহুর ক্যারিয়ারের উপর।
- আগাম নির্বাচন: জনমতের অব্যাহত চাপ এবং জোটের অভ্যন্তরে যুদ্ধের পরিচালনা ও পরবর্তী কৌশল নিয়ে মতবিরোধের কারণে আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জরিপগুলোতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে এমন পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি এবং তার বর্তমান জোট ক্ষমতা ধরে রাখতে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে পারে।
- নতুন জোট সরকার: যদি নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি সংসদে একটি বড় দল হিসেবেও আবির্ভূত হয়, তবুও যুদ্ধের পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মেরুকরণ নতুন রূপ নিতে পারে। নেতানিয়াহু ছাড়া কেন্দ্রপন্থী বা অন্য ডানপন্থী নেতাদের নেতৃত্বে একটি নতুন জোট সরকার গঠিত হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
- দুর্নীতি মামলার প্রভাব: যুদ্ধের তীব্রতা কমে গেলে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতি মামলার দিকে পুনরায় মনোযোগ দেওয়া হতে পারে। যদি এই মামলায় তার বিরুদ্ধে কোনো বিরূপ রায় আসে, তবে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটতে পারে।
- জনমতের দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন: গাজা যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নীতি এবং নেতৃত্বের বিষয়ে জনমত একটি মৌলিক পুনর্বিবেচনার সম্মুখীন হতে পারে। নেতানিয়াহুর দীর্ঘদিনের নীতিগুলোর বিপরীতে জনগণ নতুন নেতাদের এবং নতুন ধারণাকে সমর্থন করতে পারে।
- যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি: গাজা ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা চলছে – ইসরায়েলি ভূখণ্ড সংযুক্তি এবং বসতি স্থাপন থেকে শুরু করে সীমিত ফিলিস্তিনি স্ব-শাসন পর্যন্ত। এই জটিল বিষয়গুলোতে নেতানিয়াহুর অবস্থান এবং তার পক্ষে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের ক্ষমতা তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সম্ভাবনার উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
- আন্তর্জাতিক অভিনেতাদের প্রভাব: গাজা যুদ্ধের পরবর্তী পরিস্থিতি নির্ধারণে আন্তর্জাতিক শক্তি, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। ট্রাম্প প্রশাসন আপাতদৃষ্টিতে নেতানিয়াহুর নীতিকে সমর্থন করলেও, ভবিষ্যতের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এই সমর্থনকে পরিবর্তন করতে পারে। অন্যান্য আন্তর্জাতিক অভিনেতাদের চাপও ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে।
মোটকথা, গাজা যুদ্ধের পর ইসরায়েলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, এবং নেতানিয়াহুর ক্যারিয়ারের সম্ভাবনাও একইরকম অনিশ্চিত। যুদ্ধের ফলে ইসরায়েলি সমাজে গভীর বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে এবং এর ফলে রাজনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।
ইসরায়েলের রাজনৈতিক জোটের উপর গাজা যুদ্ধের প্রভাব
গাজা যুদ্ধ ইসরায়েলের বর্তমান রাজনৈতিক জোটের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে এবং এর স্থিতিশীলতা ও নেতানিয়াহুর প্রতি সমর্থনকে দুর্বল করেছে।
যুদ্ধের পূর্বে নেতানিয়াহু মূলত ডানপন্থী এবং অতি-Orthodox দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত একটি জোট সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। এই জোটটি যুদ্ধের আগেও অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের জন্য পরিচিত ছিল এবং সংসদে সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার কারণে এটি এমনিতেই দুর্বল ছিল।
৭ই অক্টোবরের হামলার পর প্রাথমিকভাবে জাতীয় ঐক্যের একটি আবহ তৈরি হয় এবং বিরোধী দলগুলোর কিছু সদস্য, যেমন বেনি গান্তজ, একটি বিশেষ যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। তবে, এই ঐক্য বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। বেনি গান্তজ এবং গাদি আইজেনকোট, যারা মধ্যপন্থী ন্যাশনাল ইউনিটি পার্টির নেতা, তারা জুন মাসে নেতানিয়াহুর জোট থেকে পদত্যাগ করেন। তারা সরকারের “প্রকৃত বিজয়” অর্জনে অক্ষমতা এবং নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত রাজনীতিকে জাতীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়ার অভিযোগ করেন। তাদের পদত্যাগ সরকারের স্থিতিশীলতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে এবং যুদ্ধের উদ্দেশ্য ও পরিচালনা নিয়ে গভীর বিভাজনকে তুলে ধরেছে।
নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক টিকে থাকার জন্য এখন চরম ডানপন্থী দলগুলোর সমর্থন আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইতামার বেন-গভিরের নেতৃত্বাধীন ইহুদি শক্তি এবং বেজালেল স্মোটরিখের নেতৃত্বাধীন ধর্মীয় জায়োনিজম-এর মতো দলগুলো গাজায় আরও আগ্রাসী সামরিক অভিযানের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে এবং তারা নেতানিয়াহুকে এই বিষয়ে ছাড় না দেওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছে। তাদের সমর্থন ২০২৫ সালের বাজেট পাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যা নেতানিয়াহুর উপর তাদের উল্লেখযোগ্য প্রভাবের প্রমাণ।
এছাড়াও, অতি-Orthodox ইহুদি পুরুষদের বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টিও জোটের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। যুদ্ধের সময় সামরিক জনবলের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট হয়ে উঠলেও, অতি-Orthodox দলগুলো তাদের ঐতিহ্যগত অব্যাহতি বজায় রাখার জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছে। এটি জোটের মধ্যে আরও একটি সম্ভাব্য সংঘাতের কারণ হতে পারে যা ভবিষ্যতে এর স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
মোটকথা, গাজা যুদ্ধ নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক জোটের উপর একটি বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে, যা পূর্বে থেকেই বিদ্যমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। মধ্যপন্থী দলগুলোর পদত্যাগ এবং চরম ডানপন্থী দলগুলোর উপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা জোটটিকে আরও আদর্শিকভাবে অনমনীয় এবং দীর্ঘমেয়াদে কম স্থিতিশীল করে তুলেছে। নেতানিয়াহুকে তার জোটের এই ডানপন্থী অংশীদারদের ক্রমাগত সমর্থন বজায় রাখতে হচ্ছে, যা যুদ্ধের পরিচালনা এবং এর পরবর্তী নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে সীমিত করছে।
আইনি চ্যালেঞ্জ ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ
নেতানিয়াহু দুর্নীতির অভিযোগে ইসরায়েলে দীর্ঘদিন ধরে চলমান একটি আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি। দুর্নীতির মামলা, ঘুষ ও বিশ্বাসভঙ্গের মতো অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত, এবং দোষী সাব্যস্ত হলে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বড় ধরনের আঘাত পেতে পারে।
তবে গাজা যুদ্ধের মাধ্যমে তিনি কিছুটা “রাজনৈতিক ঢাল” তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যুদ্ধকালীন অবস্থান তার বিরুদ্ধে চলমান সমালোচনা ও বিচারিক চাপে সাময়িক বিরতি এনে দিয়েছে। তবে যুদ্ধের ফলাফল যদি নেতিবাচক হয়, তাহলে আইনি ও রাজনৈতিকভাবে তার অবস্থান আরও দুর্বল হতে পারে।
উপসংহার
গাজায় চলমান যুদ্ধ নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে বহুমাত্রিকভাবে প্রভাবিত করছে।
- অভ্যন্তরীণ রাজনীতির চাপ,
- আইনি চ্যালেঞ্জ,
- যুদ্ধের সামরিক ফলাফল এবং
- আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া –
সবকিছু মিলিয়ে তিনি এক জটিল ও চাপপূর্ণ অবস্থায় রয়েছেন। যুদ্ধ দীর্ঘ হলে তা তার পক্ষে আশীর্বাদ হতে পারে আবার অভিশাপও। মোটকথা, গাজা যুদ্ধ এবং বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভাগ্য একে অপরের সাথে গভীরভাবে জড়িত। এই সংঘাত ইসরায়েলের জনমতকে বিভক্ত করেছে, নেতানিয়াহুর জন্য সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ উভয়ই তৈরি করেছে এবং তার ভঙ্গুর রাজনৈতিক জোটের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে। যুদ্ধের পূর্বে তার রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী হলেও, সংঘাতের অব্যবহিত পরে তার জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়। যদিও পরবর্তীতে জনসমর্থনে কিছুটা পুনরুদ্ধার দেখা যায়, তবে যুদ্ধের লক্ষ্য, পরিচালনা এবং বিশেষ করে জিম্মি সংকটকে কেন্দ্র করে জনগণের মধ্যে এখনও গভীর বিভাজন বিদ্যমান। বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণও ইঙ্গিত দেয় যে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত এবং এটি চলমান সংঘাত ও এর বহুবিধ পরিণতির উপর নির্ভরশীল। তার রাজনৈতিক টিকে থাকা নির্ভর করে তিনি কিভাবে জনমতের চাপ, জোটের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং আন্তর্জাতিক সমালোচনার মোকাবিলা করেন তার উপর। গাজা যুদ্ধের পরবর্তী ইসরায়েলের রাজনৈতিক দৃশ্যপট কেমন হবে, তা এখনও বলা কঠিন, তবে এটা স্পষ্ট যে নেতানিয়াহুর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এই সংঘাতের ফলাফলের উপর অনেকখানি নির্ভর করছে।